কৃমির লক্ষণ ও ঘরোয়া প্রতিকার
কৃমি হচ্ছে একরকমের পরজীবী প্রাণী, যা মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর দেহে বাস করে সেখান থেকে খাবার গ্রহণ করে বেঁচে থাকে।
লক্ষণ: কৃমি হলে কিছু কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন-বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা, পেট মোটা বা ভারি হওয়া, খাবারে অরুচি, মুখে থুথু ওঠা এবং কোনো কোনো কৃমিতে পায়খানার রাস্তার পাশে চুলকানি হতে পারে। কৃমি হলে সাধারণত অপুষ্টি দেখা দেয়। রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। হুক ওয়ার্মের একমাত্র খাদ্য হচ্ছে আক্রান্ত রোগীর রক্ত। অনেক সময় বক্র কৃমির এক মুখ শিশুদের এপেনডিক্সের মধ্যে প্রবেশ করে।ফলে এপেনডিসাইটিসের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। শিশুর নাক, মুখ দিয়েও কৃমি পড়তে পারে। পেটে কৃমির আধিক্যে অন্ত্রনালীর পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া অন্ত্র ফুটো করে মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। তাই উপরোক্ত উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
কৃমির কীভাবে ছড়ায় : কৃমির ডিম খাবার, পানি, বাতাস, মল, বিড়াল ও গৃহপালিত পশুর শরীর, বাথরুমের কমোড, দরজা ও হাতলে মিশে থাকে। কৃমির ডিম সেখান থেকে মুখ, নাক ও পায়ুপথ দিয়ে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। শরীরে প্রবেশ করার পর অন্ত্রে এরা বংশবিস্তার করে সেখান থেকে কখনও কখনও শরীরের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।
কৃমির ক্ষতিকর প্রভাব : কৃমি মানুষের শরীরে নানা ধরনের বিরূপ প্রভাব ফেলে।
এর মধ্যে রয়েছে—
> পেটে ব্যথা
> বমি
> শরীর দুর্বল লাগা
> ডায়রিয়া
> রক্তশূন্যতা
> ওজন কমে যাওয়া।
প্রতিকার
কয়েকটি ঘরোয়া উপায়ে পেটের কৃমি দূর করা যায়। যেমন সকালে খালি পেটে দুই-তিন কোয়া কাঁচা রসুন খেলে কৃমি মরে যায়। কাঁচা রসুন অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। প্রায় ২০ ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং ৬০ ধরনের ফাঙ্গাস মেরে ফেলতে পারে রসুন। তাই কয়েকটা দিন সকালে নিয়মিত দুই-তিনটি করে কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেলে কৃমি মরে যায়।
এ ছাড়া লবঙ্গ খাওয়া যেতে পারে। লবঙ্গ কলেরা, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মাকে প্রতিরোধ করতে পারে। সারাক্ষণ একটি বা দুইটি লবঙ্গ মুখে রাখলে পেটের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাস ইত্যাদি মরে যায়।
পেটের যেকোনো সমস্যা দূর করতে পেঁপের চেয়ে ভালো আর কিছু হয় না। যেকোনো ধরনের কৃমি তাড়াতে তাই পাকা পেঁপের বীজ গুঁড়ো করে মধুর সাথে মিশিয়ে খেতে হবে। ভালো ফল পেতে মধুর সাথে পাকা পেঁপেও খাওয়া যেতে পারে।
পেটের যেকোনো সমস্যা যেমন অ্যাসিডিটি, পেটে ইনফেকশন, খাদ্য হজম না হওয়া ইত্যাদি দূর করতে আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই এই ধরনের সমস্যায় আদার রস খাওয়া যেতে পারে।
এ ছাড়া এক চা চামচ শসার বীজ গুঁড়ো করে কাঁচা হলুদের সাথে মিশিয়ে খেলে পেটে ফিতাকৃমি থাকলে তা মরে যায়। কাঁচা হলুদ অ্যান্টিবায়োটিকেরও কাজ করে। এসব প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করেও কৃমি দূর না হলে চিকিৎসকের পরামর্শে পুরো পরিবার এক সাথে কৃমির ওষুধ সেবন করতে হবে।
0 Response to "কৃমির লক্ষণ ও ঘরোয়া প্রতিকার "
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন